রবীন্দ্রনাথের ছোটো গল্প অবলম্বনে ডিটেকটিভ ওয়েব মুভি রিলিজ হলো হইচই টিভি তে। তবে সারা ছবি জুড়েই মহিমচন্দ্রর ( অনির্বাণ ভট্টাচার্য) আক্ষেপ একটাই। আমাদের দেশের অপরাধগুলো বড়ই সরল আর নির্জীব। তার এমন কেস চাই যা পাশ্চাত্য উপন্যাসে দেখা যায়। সেখানে প্লটে থাকবে ভাঁজের পর ভাঁজ, প্যাঁচের পর প্যাঁচ। সারা সিনেমা জুড়ে সরকারের গোয়েন্দা দপ্তরের বড় বাবুর এহেন আক্ষেপ শুনতে হলো। গোয়েন্দাকে দেখে মনে হচ্ছিল কমেডির চরিত্র।
কোনো ক্লাসিক গল্পকে সিনেমাটিক করার জন্য পরিচালনার যে নৈপুণ্য প্রয়োজন তার অভাব আছে বৈ কি। জয়দীপ মুখার্জি পরিচালিত এই ছবিতে সে অভাব চোখে পড়েছে। বেশ কিছু জায়গায় কমেডি ছেড়ে ভারামোকে প্রশ্রয় দেওয়া হয়েছে। বিষ্ঠার আর অর্শের উল্লেখ না হলে কি চিত্রনাট্য জমছিলো না? প্রয়োজন হলে উল্লেখ করা যেত কিন্তু অপ্রয়োজীয় উল্লেখ পরিত্যাজ্য বলেই মনে হয়েছে। তা ছাড়া হুতাশন চরিত্রটি শার্লক হোমসের ওয়াটসন এর ধারে কাছেই আসে না। সেই হুতাশন আবার বঙ্গভঙ্গের দিন সম্পর্কে গোয়েন্দা অফিসারকে মনে করিয়ে দেবে এও হতে পারে? বলতে বাধা নেই, রবীন্দ্রনাথের গল্পের মূল সুরটা ধরা পড়েনি ঠিক। স্বামী-স্ত্রীর সম্পর্কের সূক্ষ্ম দিকটা না দেখিয়ে গুরুত্ব দেওয়া হলো মহিমচন্দ্রর ডিটেকটিভ সত্ত্বাকে।
গল্পে মহিমের স্ত্রী সুধামুখী ( ইসা সাহা ) একজন শিক্ষিতা এবং স্বাধীনতা আন্দোলনের সঙ্গে যুক্ত এক নারী চরিত্র। বিয়ের আগে তার মন্মথর ( সাহেব ভট্টাচার্য) সঙ্গে প্রেম। বিবাহের পর ও স্বামীর সুখ থেকে বঞ্চিত সুধামুখীর মন্মথর প্রতি ভালোবাসা ছিলো। কিন্তু মহিমের তাতে কোনো খেয়াল নেই। সুন্দরী , শিক্ষিতা স্ত্রীর প্রতি নজর নেই। আছে শুধু ডিটেকটিভ নভেল পড়া আর হা হুতাশ। এদিকে মন্মথকে অন্য একটি কেস এ সন্দেহ করে তার পিছু নিয়ে মহিম জানলো মন্মথ তার স্ত্রীর পূর্ব প্রেমিক।
রবীন্দ্রনাথের গল্পের মূল দিকটা বাদ পড়ে গেলো। তবে পরিচালনার ত্রুটি বিচ্যুতিগুলো অভিনেতা অভিনেত্রীরা অনেকটা মিটিয়ে দিয়েছেন অভিনয় দক্ষতায় – এই রক্ষে।
রেটিং – ৬/ ১০