এক নজরে

মুক্তিপণ চাওয়ার আগেই কিশোরকে খুন

By admin

September 13, 2020

কলকাতা ব্যুরো: ১১ বছরের এক কিশোরকে অপহরণ করে বাড়িতে মুক্তিপণ চাওয়ার মধ্যেই কুপিয়ে খুন করা হলো। ঘটনা সুত্রে দক্ষিণ ২৪ পরগনা জয়নগরের এক যুবককে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। মৃত কিশোরের নাম তুষার চক্রবর্তী। জয়নগর থানার বিশালক্ষীতলা এলাকায় তার বাড়ি। ১১ সেপ্টেম্বর বিকেল সাড়ে তিনটে নাগাদ খেলতে যাওয়ার কথা বলে বাড়ি থেকে বেরিয়ে ছিল তুষার ওরফে গদাই। তারপর থেকে আর তার কোন খোঁজ পাওয়া যাচ্ছিল না। পরের দিন তার বাড়িতে ফোন করে পাঁচ লক্ষ টাকা মুক্তিপণ চাওয়া হয়। কিন্তু এরই মধ্যে বাড়ির লোক থানায় অভিযোগ জানান। পুলিশ তদন্তে নেমে ফোনের সূত্র ধরেই ওই এলাকার বাসিন্দা মনিরুল শেখ ওরফে ভোলাকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করে।

দীর্ঘ জেরার পর মনিরুল স্বীকার করে ১১ সেপ্টেম্বর গদাইকে অপহরণ করার পর কুপিয়ে খুন করে স্থানীয় একটি বাগানে ঝোপের মধ্যে দেহ ফেলে দিয়েছে। পুলিশ তাকে নিয়ে গিয়ে সেই দেহ উদ্ধার করে। এদিকে পাড়ার ছেলেকে এইভাবে খুনের পর স্থানীয় বাসিন্দারা উত্তেজিত হয়ে মনিরুলের বাড়ি ভাঙচুর করে। রাতেই অভিযুক্তের বাড়ি জ্বালিয়ে দেয় উন্মত্ত জনতা।

ধৃত মনিরুল পুলিশকে জেরায় জানিয়েছে, লকডাউনের মধ্যে বাজারে প্রচুর দেনা হয়ে গিয়েছিল। সেই টাকা জোগাড় করতেই ওই কিশোরীকে অপহরণ করে মুক্তিপণ চেয়েছিল। কিন্তু মেরে ফেলার পর কেন তার বাড়িতে ফোন করে মুক্তিপণ চাইল সে ব্যাপারে অবশ্য মনিরুলের থেকে এখনো স্পষ্ট কিছু জানতে পারেনি পুলিশ।’ রবিবার ধৃতকে বারুইপুর আদালতে তোলা হয়।

মৃত কিশোরের পরিবার জানিয়েছে, পাড়ার ছেলে ভোলার সঙ্গে ১১ সেপ্টেম্বর বিকেলে পাখি কিনতে যাওয়ার কথা ছিল গদাইয়ের। কিন্তু সন্ধ্যা পর্যন্ত সে বাড়ি না ফেরায় ভোলাকে জিজ্ঞাসা করা হলে সে জানিয়েছিল গদাই তার কাছে যায়নি। এমনকি রাত পর্যন্ত ওই পরিবারের লোকের সঙ্গে গাড়ি করে গদাই এর খোঁজে গোটা এলাকায় চক্কর দেয় ভোলা। তখনো তার আচার-আচরণে কোনরকম সন্দেহের সুযোগ দেয়নি। এত নৃশংস ঘটনার পর স্থানীয় লোকজন ভোলার চরম শাস্তির দাবি তুলেছে।পুলিশ কর্তারা জানিয়েছেন, এখনো পর্যন্ত ভোলায় এই ঘটনায় অভিযুক্ত বলে একমাত্র অভিযুক্ত বলে মনে হচ্ছে। তবে তাকে আরও জেরা করে এর পিছনে অন্য কেউ আছে কিনা তা জানার চেষ্টা হচ্ছে।

পুলিশ জানিয়েছে, অভিযোগ আসার পর গদাই এর বাড়িতে যে নাম্বারে ফোন এসেছিল তার গত ছয় মাসের কল লিস্ট দেখে বেশ কয়েকজনকে আটক করা হয়। তাদের মধ্যে থেকেই খোঁজ পাওয়া যায় মনিরুলকে। কিন্তু কিশোরকে খুন করার প্রায় ১৬ ঘন্টা পরে কেন তার বাড়িতে ফোন করে মুক্তিপণ চাইল, তা নিয়ে যথেষ্টই ধন্ধে পুলিশ। পুলিশ এ ই খুনের পিছনে আর কোন গোলমাল আছে কিনা তা জানতে ধৃতকে হেফাজতের নিতে চান তদন্তকারীরা। একসময় কলেজ পড়া মনিরুল পরে পড়াশোনা ছেড়ে দেয়।