এক নজরে

#TETScam: সিবিআইকে সিট গঠনের নির্দেশ, হাইকোর্টের নজরদারিতেই তদন্ত

By admin

June 15, 2022

কলকাতা ব্যুরো: প্রাইমারিতে নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় সিবিআই তদন্তে সন্তুষ্ট নয় কলকাতা হাইকোর্ট। সিবিআই তদন্তের নির্দেশের পর এবার এই মামলায় আরও কড়া পদক্ষেপ নিল হাইকোর্ট। বুধবার ওই মামলার শুনানিতে প্রাইমারি দুর্নীতির তদন্তে এবার একটি স্পেশাল ইনভেস্টিগেশন টিম(সিট) গঠনের নির্দেশ দিলেন বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়। পাশাপাশি প্রাইমারিতে ২৬৯ জনের নিয়োগ দুর্নীতি ও ‘রঞ্জন সত্য’ মামলার তদন্ত এবার হবে কলকাতা হাইকোর্টের নজরদারিতেই। সিটের ওই টিমে থাকবেন ১০-১২ জন অফিসার। ওই টিমে থাকবেন একজন জয়েন্ট ডিরেক্টর। তবে বুধবার উচ্চ আদালতের কাছে তাদের তদন্তে ভরসা রাখার আর্জি জানাল কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা। সিবিআই আদালতকে জানিয়েছে, শিক্ষক নিয়োগে অনিয়মের মামলার তদন্ত করতে শীঘ্রই দিল্লি থেকে উচ্চ পদমর্যাদার আধিকারিক আসছেন। তাঁর নেতৃত্বেই চলবে তদন্ত। তাঁর নাম আগাম ১৭ জুন জানাতে হবে। ওই দিনই মামলার পরবর্তী শুনানি।

সিবিআইয়ের আইনজীবীর এই মন্তব্যের পরেই বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায় বলেন, কিন্তু আপনারা কতটা পারবেন, তা নিয়ে সন্দেহ থেকেই যাচ্ছে। এরপরই সিবিআই তদন্তের প্রাথমিক রিপোর্ট আদালতের হাতে তুলে দিয়ে আইনজীবী বিল্বদল বিচারপতির উদ্দেশে বলেন, ধর্মাবতার, ভরসা রাখুন। আমি বলছি আমরা সঠিক পথে তদন্ত নিয়ে যাব। আমরা আজ এই মামলার প্রাথমিক তদন্ত রিপোর্ট জমা দিচ্ছি। সেই রিপোর্ট দেখলেই বোঝা যাবে, অন্য যে কোনও তদন্তকারী সংস্থার থেকে সিবিআই এগিয়ে।
তবে বুধবারের শুনানিতে অসন্তোষ প্রকাশ করেন বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়। এদিন সিবিআইয়ের উদ্দেশ্যে বিচারপতি বলেন, নভেম্বরে প্রথম এই মামলায় নির্দেশ দিয়েছিলাম। আদালত চাইছে যারা দুর্নীতির জন্য চাকরি পাননি তারা চাকরি পাক। কিং পিনদের শাস্তি দিতে হবে। তা না হলে এ জিনিস থামবে না। এখনও পর্যন্ত কিছুই হয়নি। পদক্ষেপ নিন। বাগ কমিটির রিপোর্ট আপনাদের হাতে রয়েছে। তার পরেও কিছুই করেননি। এটা মেনে নেওয়া যায় না। মনে রাখবেন আরও একটা সারদা চাই না।

এদিকে, আজ শুনানিতে উঠে আসে ‘রঞ্জন সত্য’ প্রসঙ্গ। প্রাক্তন মন্ত্রী উপেন বিশ্বাসের অভিযোগের ভিত্তিতেই এই তদন্ত। মামলায় পার্টি করা হয় প্রাক্তন সিবিআই কর্তা উপেন বিশ্বাসকে। তিনি ফেসবুকে একটি পোস্ট করেন। রঞ্জন সত্য নামে সেই পোস্টে প্রাইমারি ও আপার প্রাইমারিতে নিয়োগে দুর্নীতির অভিযোগ তোলা হয়। রঞ্জন একটি কাল্পনিক নাম। আসল নাম চন্দন মন্ডল। উপেন বিশ্বাসের অভিযোগ, এই ব্যক্তি টাকার বিনিময়ে অনেককে চাকরি দিয়েছেন প্রাইমারি ও আপার প্রাইমারিতে। প্রাইমারির ক্ষেত্রে রফা হয় ন্যূনতম ১০ লক্ষ টাকায়। আপার প্রাইমারির ক্ষেত্রে সেটা ১৫ লাখ থেকে ১৮ লাখ, কখনও ২০ লাখ টাকায়। আর নবম ও দশম শ্রেণির ক্ষেত্রে সেই টাকার অঙ্কটাই ২৫ লাখ।

ওই ফেসবুক পোস্টে আরও বলা হয় যে, রঞ্জন এতটাই সত্য যে টাকা দিতে পেরেছে, তাকে তিনি চাকরি দিয়েছেন। আর চাকরি দিতে না পারলে, টাকা ফেরত দিয়েছেন। একটাই নির্দেশ ছিল যে, সাদা খাতায় শুধু রোল নম্বর লিখে জমা দিতে হবে। কিছু লিখলে আর চাকরি পাওয়া যাবে না।

এই বিষয়টিই সামনে তুলে আনেন মামলাকারীরা। ৮৬ জনের ভুয়ো নিয়োগের অভিযোগে সরব হন। অভিযোগের প্রেক্ষিতে প্রয়োজনীয় তথ্যপ্রমাণ বুধবার আদালতে জমা দেওয়া হয়। বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় এরপরই প্রাইমারি ও আপার প্রাইমারি নিয়োগ মামলায় সিবিআই তদন্তের নির্দেশ দেন। এবার ওই ‘রঞ্জন সত্য’ মামলারও তদন্ত হবে আদালতের নজরদারিতে।