কলকাতা ব্যুরো: কয়লা পাচার ও বেআইনি কয়লা খাদান চালানোর অভিযোগে এবার সিবিআই তলব করল অনুপ মাঝি ওরফে লালাকে। সোমবার বেলা ১১ টায় নিজাম প্যালেস সিবিআই দপ্তরে হাজির হওয়ার জন্য সমন পাঠানো হয়েছে কয়লা কেলেঙ্কারিতে বারংবার নাম উঠে আসা পুরুলিয়ার প্রত্যন্ত গ্রাম নিতুড়িয়ার ওই যুবককে।এর আগে প্রথম আয়কর দপ্তর ও পরে সিবিআই একাধিকবার তল্লাশি চালায় অনুপ মাঝি ওরফে লালার বিভিন্ন ডেরায়। ইস্টার্ন কোয়ালফিল্ড লিমিতে ড বা। ই সি এলের বেআইনি কয়লা কারবারের তদন্তে নেমে ঘটনার ব্যপ্তি ও গভীরতা বুঝে এবার আসানসোলেই ক্যাম্প অফিস করে ফেলল সিবিআই। শনিবার সেই ক্যাম্প অফিসে ডেকে তদন্তকারীরা জিজ্ঞাসাবাদ করেন দুই ব্যবসায়ীকে। যাদের সঙ্গে এই কয়লা পাচারের যুক্ত থাকার অভিযোগ উঠেছে।আবার সিবিআইয়ের অন্য একটি দল শুক্রবারের পর শনিবার ও ইসিএলের বিভিন্ন কয়লা খনি এলাকায় তল্লাশিতে যায়। এক কোলিয়ারি ম্যানেজারের বাড়িতে হানা দেয় সিবিআই। একইসঙ্গে বেআইনি কয়লা খাদান এর অবস্থা খতিয়ে দেখেন তদন্তকারীরা।তাতে রীতিমতো বিস্মিত সিবিআইয়ের অফিসাররা। কলকাতায় সিবিআইয়ের এক অফিসার বলেন, গোটা এলাকা জুড়ে যখন তদন্ত চলছে, তার মধ্যেও ওইসব বেআইনি খাদা নে চুটিয়ে কয়লা তোলা হচ্ছে। দুদিন ধরে সিবিআইয়ের ফিল্ড অফিসাররা খা দান গুলি খতিয়ে দেখতে যান। তারা সেখানে পৌছানোর আগেই খবর হয়ে যাওয়ায় দ্রুত লোকজন সেখান থেকে কেটে পড়লেও, সহজে বোঝা যায় খানিক আগেও সেইসব খাদানে কাজ চলছিল। তা স্পষ্ট বুঝতে পারেন তদন্তকারীরা সেখানে গিয়ে যেভাবে বিপদ মাথায় নিয়ে লোকেরা ওইসব খাদানে নামে, সেইসব জায়গায় তখনো মই নামানো রয়েছে নিচে। এমনকি কয়লা তোলার অন্যান্য যন্ত্রপাতিও ছড়িয়ে রয়েছে আশপাশে। আবার কিছু কয়লা তুলে সদ্য রাখা হয়েছে স্তুপ করে।যাবতীয় পরিস্থিতি খতিয়ে দেখে সিবিআই অফিসার নিশ্চিত এত বেশি লোকজন জড়িত যে তদন্ত করার আমল দিচ্ছে না স্থানীয় বাসিন্দারা। এই ঘটনায় যুক্ত থাকলেও এদের পিছনে বড় বড় রাঘববোয়ালরা মদ ত দিচ্ছে বলে নিশ্চিত সিবিআই।ইতিমধ্যেই ঝাড়খন্ডে এমন দুজন ট্রাকচালককে পুলিশ গ্রেপ্তার করে, যারা এই কয়লা প্রচারে একটা বড় ভূমিকা নেয়। পরে তাদের হেফাজতে নিয়ে টানা জেরা করে সিবিআই। জেরা করে গোটা কয়লা চুরি এবং পাচারের রুট ম্যাপ সহ কারা এর সঙ্গে যুক্ত, কোথায় কোথায় এইসব বেআইনি কয়লা যায়, কাদের দিয়ে কাজ করানো হয়, এমন বহু খুঁটিনাটি তথ্য জানতে পেরেছে সিবিআই।তাতে সিবিআইয়ের অফিসাররা নিশ্চিত, কয়লার বেআইনি কারবারে কোটি কোটি টাকা আয় হয়। আর এটা একটা এলাকার গরিব মানুষকে কাজে লাগিয়ে চালনা করা হয়। অন্যদিকে এদের পিছনে পুলিশ থেকে শুরু করে প্রভাবশালী অংশের একেবারে শীর্ষ তলা পর্যন্ত যুক্ত রয়েছে। ফলে খুব সহজে এদের ঘায়েল করা মুশকিল। লালা সহ কারবারিদের সঙ্গে কলকাতা এবং দিল্লির প্রভাবশালী যোগাযোগ আছে বলে নিশ্চিত তদন্তকারীরা। ফলে এবার লালাকে নিয়ে সিবিআই এর অবস্থান কি হয়, সেদিকে এখন তাকিয়ে ঘুম ছুটেছে বহু প্রভাবশালীর।