এক নজরে

তিমিরেই বিশ্বভারতীর জটিলতা

By admin

August 19, 2020

কলকাতা ব্যুরো: আশ্রমিকদের বিক্ষোভ-অবস্থানে বুধবার অন্য ছবি দেখলো কবিগুরুর সাধের শান্তিনিকেতন। সকাল থেকে আশ্রমিকদের ভিড়ে সংগীত ভবনের সামনে তৈরি হলো অন্য ইতিহাস। যে মানুষগুলি প্রাকৃতিক পরিবেশে এক সময় বিশ্ব ভারতী বিশ্ববিদ্যালয় থেকে নিজেদের শিক্ষা-সংস্কৃতি গড়ে তুলেছিলেন, তাঁরা এ দিন হাতে প্ল্যাকার্ড নিয়ে পথে নামলেন পুরোনো পরিবেশ রক্ষায়। ইতিমধ্যে কর্তৃপক্ষের সিদ্ধান্তে সংগীত ভবনের সামনে তৈরি হয়ে গিয়েছে ‘জেল খানা’র মতো পাঁচিল। অথচ যা রবীন্দ্রনাথের শান্তিনিকেতনের এতদিনের ভাবনার সঙ্গে বেমানান, বলছেন আশ্রমিকরাই।নস্টালজিয়ায় ভুবনডাঙ্গার মাঠে পাঁচিল ঘেরা দিয়েই উত্তপ্ত হয় বোলপুর। কেন্দ্রীয় শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে বিবাদে জড়ায় রাজ্য। তাতে রং লাগে রাজনীতির। সেই সূত্রে পাঁচিল ভাঙা, প্রতিষ্টানের গেট উপড়ে নেয় শাসকের বুলডোজার।একসময় শান্তিনিকেতনে শিক্ষা শেষ করে নিজেদের পেশা শেষে অনেকেই এখন এই আশ্রমিক পরিবেশের বাসিন্দা। এতদিন যাঁরা বিভিন্ন সময়ে প্রতিষ্ঠানের পাশে দাঁড়িয়ে না না ইস্যুতে গলা ফাটিয়েছেন এই শিক্ষাঙ্গনের পক্ষে, এ দিন তাঁরাই পাল্টা অভিযোগ তুলেছেন এই প্রতিষ্ঠানের কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে। এক আশ্রমিক বলেন, একসময় এক রাজ্যপালের সামনে চুক্তি হয়েছিল যদি কোনো কারণে কোনোদিন প্রয়োজন পড়ে সেক্ষেত্রে সর্বোচ্চ ৪ ফুট ৮ ইঞ্চি পর্যন্ত পাঁচিল তোলা যাবে। কিন্তু এখন সে সব কিছুই মানা হচ্ছে না।

আশ্রমিকদের বক্তব্য, নিয়ম করে উপাচার্য আসেন, মেয়াদ শেষে চলে যান। কিন্তু এমনভাবে শান্তিনিকেতনের প্রাকৃতিক পরিবেশ নষ্ট করার কেউ ধৃষ্টতা কোনোদিন দেখাননি। এমনভাবে পরিবেশ ধ্বংস করে এই প্রতিষ্ঠানের নিজস্বতা নষ্ট করা যে কোনো মূল্যে রোখার দাবি তুলছেন তাঁরা।এদিকে রাজ্য সরকার সমস্যা সমাধানে সব পক্ষকে নিয়ে বৈঠক ডাকার নির্দেশ দিলেও জেলাশাসকের সেই বৈঠক বয়কট করেছে বিশ্বভারতী। ফলে সেদিক দিয়েও সমাধানের পথ বেরোনোর পথ বন্ধ। সবার বুধবার ১২ ঘন্টা অনশনের ঘোষণা করেও এ দিন আর সে পথে হাটেননি উপাচার্যরা।এরইমধ্যে কেন্দ্রীয় সংস্থা ইডি সোমবারের ঘটনা নিয়ে তদন্ত শুরুর তোড়জোড় শুরু করায় গোটা ঘটনায় নতুন মাত্রা যোগ করেছে। উপাচার্য বিদ্যুৎ চক্রবর্তী সত্যিই বিশ্বভারতীর ঐতিহ্য নষ্ট করছেন, না কি কেন্দ্রীয় সরকারেরই নির্দেশে তিনি এই কাজ করছেন তা নিয়ে এখন নতুন প্রশ্ন ঘুরপাক খাচ্ছে ভুবনডাঙ্গার মাঠ থেকে খোয়াইয়ের গায়ে।