কলকাতা ব্যুরো: মানুষের সঙ্গেই চিনা মাঞ্জায় রক্তাত্ব হচ্ছে পক্ষীকূল। ঘুড়ির এই মারণ সুতো কপালে ভাঁজ ফেলেছে বোটানিক্যাল গার্ডেন কর্তৃপক্ষের। জীবন সংশয় দেখা দিয়েছে পক্ষিকুলের। গঙ্গার ধারে বজবজ, গার্ডেনরিচ ও নাজিরগঞ্জ এলাকা থেকে ওড়ানো ঘুড়ির জ্বালায় পাখিরা অতিষ্ট। ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছে গার্ডেনের ছোটো, বড়ো সব গাছগুলি। এই গার্ডেনের উদ্ভিত বিজ্ঞানী বসন্ত সিংহ র দাবি, লকডাউনের সময় থেকেই এই সব অঞ্চলে ঘুড়ি ওড়ানো বেড়েছে। গঙ্গার অন্য পার থেকে আকাশে ঘুড়ি পড়ছে বাগানে। সঙ্গে ধারালো মাঞ্জা সুতো।
বসন্ত বাবুর মতে আগেও এই ঘটনা ঘটত। তবে এখনকার মাঞ্জা সুতো গুলো অন্যরকম। সেগুলো প্লাস্টিক জাতীয় সুতো যা বাজারে চিনা মাঞ্জা নামে পরিচিত। জল ও রোদে নষ্ট হয় না এ সুতো। এমন কি মানুষের গলায় জড়িয়ে গেলো ও সহজে ছিরছে না। মানুষের গায়ে এই সুতো জড়িয়ে পড়লে গভীর ক্ষত দেখা দিচ্ছে। চিনা মাঞ্জা পরে পরে এক অদৃশ্য জাল তৈরি হয়েচে বাগানে। এখন তা মরণ ফাঁদ ।
বাগানের কর্মীদের ভয় তো আছেই, পাখিরা আকাশে ওড়ার সময় এই সুতোয় আটকা পড়ছে। অনেক পাখির মৃত্যু ও হয়েছে। প্রতিদিন চার পাঁচটি পাখির ডানা আটকে পড়ছে এই মরণ ফাঁদে। অনেক পাখিকে বাগানের কর্মীরা বাঁচিয়েছেন। কিন্তু সুতো তে তারা এমন ভাবে জখম হয়েছে যে তারা ওরার ক্ষমতা হারিয়েছে। এই মাঞ্জায় ক্ষতি হচ্ছে গাছেদের ও। গাছে জড়িয়ে থাকা এই সুতো থেকে গাছে আগাছার জন্ম হচ্ছে। পাখি আর বাগান বাঁচাতে প্রতিদিন কর্মীরা হতে লাঠি নিয়ে ঘুরে ঘুরে পাখি আর বাগান বাচাচ্ছে। বি গার্ডেন এর ডিরেক্টর কনাদ দাস জানান, সরকার যতদিন না কঠোর পদক্ষেপ নিচ্ছে, এই সমস্যা থেকে মুক্তি পাওয়া মুশকিল।
যদিও চিনা মাঞ্জার উপদ্রব বন্ধ করতে গত মাসেই নির্দেশ দিয়েছে হাইকোর্ট। মা ফ্লাই ওভার সংলগ্ন এলাকা থেকে ওড়ানো ঘুড়ির মারণ সুতোয় মৃত্যু হয়েছে এক জনের। গত বছর তিনেকে জখম অন্তত ১৮ জন। কলকাতা হাইকোর্টে দায়ের মামলায় কোনো রকম প্লাস্টিক বা চীনা মাঞ্জা ব্যাবহার নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হয়েছে।