এক নজরে

জাঁকজমকহীন এবার আসানসোল গ্রামের দুর্গাপুজো

By admin

October 18, 2020

আসানসোলের ২৮৬ বছরের ঐতিহ্যবাহী আসানসোল গ্রামের উগ্র ক্ষত্রিয়দের প্রাচীন দূর্গাপূজোয় এবার থাবা বসিয়েছ কোভিড-১৯ ।কোভিড নিয়ন্ত্রনে সরকারি বিধি নিষেধ মেনে এবছর বন্ধ থাকছে গ্রামের আটটি পুজোর সম্মিলিত নবপত্রিকা যাত্রা ও বিজয়ায় মহিলাদের সম্মিলিত সিদুঁর খেলা। গ্রামের আটটি পুজোর বিসর্জনেও প্রতিবছরের মতো এবার সম্মিলিত ভাবে হচ্ছে না বলে জানালেন আসানসোল গ্রামের নীলকন্ঠ জীউর ট্রাস্টি কমিটির সভাপতি শচীন রায় ।

আসানসোল গ্রামের উগ্র ক্ষত্রিয়দের আটটি পুজোর মধ্যে সর্বাধিক প্রাচীন ও আদি বড় রায়দের দূর্গাপূজো যা বড় দুর্গা বা বড় মা নামে খ্যাত । গ্রামের প্রতিষ্ঠাতা ন’কড়ি ও রামকৃষ্ণ রায় যুগল এই পূজার প্রবর্তক ছিলেন । ন’কড়ি ও রামকৃষ্ণ রায় সম্পর্কে ছিলেন শ্বশুড় -জামাই। এরা ছিলেন মোগল সেনাপতি মানসিংয়ের সেনাদলের কর্মী। বাংলার বিদ্রোহী বারো ভুইঁয়া দমন করে দিল্লী ফেরার পথে আগ্রার সৈন্য বাহিনীর অনেকেই বর্ধমান জেলার বিভিন্ন স্থানে থেকে যায়। যারা পরবর্তী কালে আগুরি সম্প্রদায় নামে পরিচিত। ন’কড়ি ও রামকৃষ্ণ রায় ছিলেন তাদের অন্যতম ও কাশীপুর রাজার জায়গীরদার।

পরবর্তী কালে পরিবার বাড়তে থাকায় পারিবারিক পুজোর সংখ্যাও গ্রামে বাড়তে থাকে। রায়দের বড় দুর্গা , মেজো দুর্গা , সেজো দুর্গা, ছোট দুর্গাসহ মোট ৭টি এবং গ্রামের উপর পাড়ায় দাঁ বাড়ীর দুটি, মোট ৮ টি দুর্গাপুজা আসানসোল গ্রামে সম্মিলিতভাবে প্রকৃত দুর্গোৎসবের রূপ দেয়। গ্রামের নীলকন্ঠজীউর ট্রাস্টি কমিটির সুষ্ঠু ব্যাবস্থাপনায় এই ৮ টি দুর্গাপুজোর সম্মিলিত ভাবে নবপত্রিকা যাত্রা, বিসর্জন ও বিজয়ায় মহিলাদের সম্মিলিত সিদুঁর খেলা , বিসর্জনের পর আতসবাজির প্রদর্শনী ছিল গ্রামের দীর্ঘ্ দিনের ঐতিহ্য ও পরম্পরা। কোভিডে এবছর যার ছেদ ঘটছে এবারের দুর্গোৎসবে। আসানসোল গ্রামের সঙ্গীত শিল্পী মিতা রায় ,বাচিক শিল্পী বৃষ্টি রায় , গৃহবধু কৃষ্ণা রায় ও লক্ষী দাঁ জানান, কোভিডের জন্য এই বছর গ্রামের সম্মিলিত অনুষ্ঠানসূচী বন্ধ থাকায় আমরা আগামী বছরের অপেক্ষায় রইলাম। সাথে বিসর্জনে নানান রঙে আকাশ রাঙানো ঐতিহ্যবাহী আতসবাজির প্রদর্শনীর অপেক্ষায় থাকবেন সমগ্র আসানসোলবাসী।