এক নজরে

#SpecialReport : ভারতের বিস্মৃতপ্রায় ধর্ম: নাথধর্ম বা নাথপন্থা॥

By admin

June 17, 2022

ভারতের প্রতিবাদী ধর্মমত গুলির মধ্যে বৌদ্ধ, জৈন, আজিবীক মূখ্য এদের বাইরে কিছু গৌণ ধর্মমত গড়ে উঠেছিল যাদের বিকাশ আর ব্যাপ্তি গোটা ভারত জুড়ে ছিল । কিন্তু বর্তমানে এই ধর্মগুলি হদিস মেলে না ; মিলেও কোন এক উপ-গৌণ ধর্মের পরিবর্ধিত রূপ হিসাবে । ভারতের বিস্মৃতপ্রায় ধর্ম নাথধর্ম বা নাথপন্থা। আদি-মধ্যযুগের ভারতে নাথধর্মের জনপ্রিয়তা ছিল । শিব কে কেন্দ্র করে যোগসাধনার মাধ্যমে একদল মানুষ মোক্ষলাভে প্রয়াসী হয়েছিল এঁরাই ‘নাথযোগী সম্প্রদায়’ নামে পরিচিত ।নাথদের আদিগুরু শিব যিনি আদিনাথ নামে পরিচিত ।নাথ সম্প্রদায়ের উল্লেখ পাওয়া যায়- ব্রহ্মবৈবর্ত পুরাণ,আগম সংহিতা ,পরাশর সংহিতা ইত্যাদি গ্রন্থে। নাথপন্থার উদ্ভব নিম্নশ্রেনীর মানুষদের মধ্যে ঘটেছিল বলেই সর্বত্র ভাবে মনে হয় ; কিন্তু এর মূলে বৌদ্ধ, জৈন,আজিবীক ধর্মের প্রভাব ছিল প্রবল । পশ্চিম ভারতের মহারাষ্ট্রে এমনকী দক্ষিণ ভারতে নাথযোগীদের প্রাধান্য ছিল । দক্ষিণ ভারতের “মাহেশ্বর সিদ্ধ” নামক যে সম্প্রদায়টি বর্তমানে আছে তা মূলতঃ নাথপন্থীদের রূপান্তরিত একটি সেক্ট ।

নাথপন্থা আসলে একটি লৌকিক ধর্ম যেখানে পরিবর্তন-পরিবর্ধন ও রূপান্তর সব সময় হয়েছে । নাথপন্থার মূল বিষয় অষ্ঠসিদ্ধি অর্জনের মধ্যে দিয়ে অলৌকিক ক্ষমতা অর্জন করা। নাথযোগীরা যোগসাধনা, প্রানায়মের দ্বারা শরীরকে নিয়ন্ত্রন রাখতেন ।

ড.নরেন্দ্রনাথ ভট্টাচার্য-তার ভারতীয় ধর্মের ইতিহাস বই এ লিখেছেন-নাথধর্মের উদ্ভব কেন্দ্র হিমালয়ের নিম্নাঞ্চলে, নাথপন্থাদের যার প্রবক্তাদের মধ্যে মৎস্যেন্দ্রনাথ ও গোরক্ষনাথের নাম পাওয়া যায়। উত্তর ভারতের বিভিন্ন স্থানে নাথপন্থীদের ‘কানফট যোগী’ বলা হয় কারন তারা কানে একধরনের অলংকার পড়তেন । এঁরা ত্রিশূল,রুদ্রাক্ষ ব্যাবহার করেন । এই ধর্মে দেবী সংক্রান্ত তান্ত্রিক পদ্ধতির ব্যাবহার বর্তমান । নাথধর্মের উপর শৈব, শাক্ত, বৌদ্ধ, জৈন সব ধর্মের প্রভাব আছে। কোন কোন গবেষক নাথদের রুদ্রজ ব্রাহ্মণ বলে থাকেন ,কারন তাদের আচার অনুষ্ঠানের মধ্যে যজুবেদোক্ত রুদ্রজ সংস্কৃতির প্রভাব আছে । নাথপন্থা নিয়ে অনেক মত প্রচলিত আছে এমনকি এর সাধন পদ্ধতি , বিশেষ করে উদ্ভব নিয়ে ও ।