এক নজরে

বৃদ্ধ জন্মদিন, তাই গিয়েছে আবেগ!

By admin

August 17, 2020

কলকাতা ব্যুরো: এখন আর সেই মানুষগুলি নেই। স্বাধীনতার বয়সও নয় নয় করে চুয়াত্তর ছুঁয়েছে। ফলে সেই আবেগ আর সেই টাটকা স্মৃতিও হারিয়েছে। ফলে ১৫ আগস্ট দেশের স্বাধীনতা দিবসেই ওরাও পালন করেন স্বাধীনতা দিবস। কিন্তু ইতিহাস বলছে, জলপাইগুড়ি, দিনাজপুর, মালদা, মুর্শিদাবাদ, নদীয়া আর ২৪ পরগনার একটা বড় অংশই স্বাধীনতার স্বাদ পেয়েছিল, ১৮ আগস্ট। অর্থাৎ ১৯৪৭-এর ১৫ আগস্ট যেদিন দেশ স্বাধীন হল তার পরের তিনদিন এই সব জায়গার মানুষের জীবন কেটেছে এক দুর্বিষহ উৎকন্ঠায়। আবার একইসঙ্গে সেই তিনদিনের পরেই এ দেশের মানচিত্রে চলে আসা কিছু জায়গা ফিরেছিল উল্টোদিকে।

এই ১৮ আগস্ট স্বাধীনতা দিবস পালনের রীতি আজ আর প্রায় নেই। হয়তো প্রয়োজনও ফুরিয়েছে। কিন্তু নদীয়া, মুর্শিদাবাদ ও মালদার কিছু এ প্রজন্মের মানুষ আজও সেই স্বাধীনতা দিবস পালন করেন ১৮ তেই। কোথাও গত বছর পর্যন্ত তিনদিনের অনুষ্ঠান শেষ হতো ১৮ তে। কোথাও আবার একদিনেই পালন হতো স্বাধীনতা দিবস। কোথাও উৎসবের অঙ্গ সম্প্রীতির পদ যাত্রা আবার কোথাও নৌকা বাইচের মতো জমায়েতের অনুষ্ঠান। কিন্তু এবার করোনা আবহে সে সব হবে অনেকটাই ছোট করে।

সাহেবদের ‘সামান্য ভুলে’ আর পেনের খোঁচায় তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তানে যুক্ত হয়ে যাওয়া কৃষ্ণনগর ও রানাঘাট তিনদিন পর মাউন্ট ব্যাটনদের ভুল শুধরে ফিরলো বেঙ্গল প্রভিন্সে। আর মেহেরপুর, চৌডাঙ্গা, কুষ্টিয়া হয়ে গেল পূর্ববঙ্গের। একই এলাকার দুটি গ্রাম বা দুটি জনপদ রাজনীতির ভাগ বাটোয়ারায় চলে দুটি দেশে। মাঝে পরে গেল কাঁটা তার।

তিনদিনের ‘যুদ্ধে’ মালদা ও চাঁচল ফিরলো ভারতে। মুর্শিদাবাদের বেশিরভাগই ফিরলো এ দেশে। নদিয়ার কৃষ্ণনগর, রানাঘাট ফিরলো। ফিরলো ২৪ পরগনার বনগাঁ। আর এই তিনদিনের ‘যুদ্ধে’ বিভিন্ন এলাকা ফেরাতে তখন বড় ভূমিকা নিয়েছিলেন রানী জ্যোতিময়ী দেবী, শ্যামা প্রসাদ মুখোপাধ্যায়, কাবু লাহিড়ী, আশু চৌধুরী, বলদেবানন্দ গিরি, অতুল্য ঘোষের মতো নেতারা। এঁদের কেউ মুর্শিদাবাদ, কেউ মালদা আবার কেউ নদীয়ার হয়ে লড়াই দিলেন, আবার কেউ সেইসব দাবি বাস্তবায়নের জন্য কলকাতায় পরে থেকে দরবার করে গেলেন বড়লাটের সঙ্গে। যার ফলে কিছু এলাকা স্বাধীনতার তিনদিন পরেও ফিরলো ভারতে। কিন্তু সত্যিই মানুষের রায়ে যে বাংলা ভাগ সেদিন হয়নি, তার প্রমাণ আজও বাহন করছে দুই বাংলাই। বিভিন্ন ক্ষেত্রে।।